সোমবার, ২৩ মে, ২০১১

অনেক কিছু

 

রোদ-নাট্যম

আজ রোদের বুকে ঝাঁপ দেব
নিজেই নিজেকে শাপ দেব
পুড়ে যাক যাক
খাক হয়ে যাক
মাটির দেহে চৌচির চির
ইঞ্চি ইঞ্চি মাপ নেব
হাপর শ্বাসে দমে দমে
পোড়া মাটির ভাপ নেব
ধূসর চোখে ঠুলি মেরে
খুলির ভেতর ধূলি ঝড়ে
আলগা বাতাস হলকা হলে
মগ্ন ধ্যানে তাপ নেব
রোদের সাথে যুক্তি করে
কারাগারে মুক্তি পুড়ে
ভাগাভাগি পাপ নেব
খান্নাসের বিলোপ হলে
সন্তাপ আর বিলাপ ফেলে
নিংড়ে নিয়ে সূর্য ছটা
সূর্য স্নানের আলাপ হব
রোদের ভেতর ঝাঁপ দেব
রোদের বুকেই ঝাঁপ দেব
***
২৪শে এপ্রিল ২০১১/২৫শে এপ্রিল ২০১১

এই ভোরের প্রতীক্ষায় থাকি

মৃত্যুর পরেও কারো কারো চোখ খোলা থাকে এই সুন্দর পৃথিবীটাকে আরো অতিরিক্ত কিছুটা সময় দেখে নেবার জন্য।
ভোরের আকাশের আয়নায় চোখ রাখতেই মন ভাল হয়ে গেল।বিগত ঘুমহীন রাতের যন্ত্রণা,কালো কালো ছায়াগুলো অথবা পাঁজর বিদীর্ণ করা ছুরিকার দগদগে ক্ষতগুলোর কথা একবারও মনে পড়লনা।আমি বরং দেখি কি উন্মাতাল উল্লাসে ঘাসের উপর উড়ে বেড়ায় কমলা রঙ প্রজাপতি। কি গভীর অভিনিবেশে লাল কলাবতীর ঝাড়ে , সবুজ ঘাসের বুকে মেখে দেয় প্রেমের পরাগ।ডানায় সাদা-কালোর মিশেলে অপূর্ব ছবি এঁকে নিয়ে গাছের ডাল থেকে ডালে কখনো শ্যামল ঘাসের চাদরে নেমে আসে দু'টো দুরন্ত পাখী।চঞ্চল-বিহঙ্গ কি নাম তোমার? আমার বন্ধু হবে? প্রতিটি সকালের বারান্দায় আমি ছড়িয়ে দেবো ভালবাসার শস্যকণা।।অপার মুগ্ধতায় চেয়ে চেয়ে দেখবো দানা খুঁটে খুঁটে তোলার টুকটুকে আনন্দটুকু।

পৌণপুণিক গন্তব্যের অপেক্ষা

সশব্দ সন্ধ্যা নেমে আসে নাগরিক রাজপথে।
কালো ধোঁয়া, সাদা ধোঁয়া
উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে গুমোট চারদিক।
ঘাম জড়ানো জুলফি আর কপালে
চটচটে ধুলো।
কর্মক্লান্ত শরীর মনের আবর্জনায়
সহযাত্রীদের জড়িয়ে নেবার প্রচেষ্টায় ব্যাস্ত সকলে।
অন্যের ঘামে ঘাম ছুঁইয়ে বসে থাকা মানুষগুলোর
মৃতপ্রায় চোখ থেকে স্বপ্ন ছুটি নিয়ে চলে গেছে বহুদুরে।
অপেক্ষা তাই পৌণপুণিক গন্তব্যে পৌছোনোর।
____________________________________
dM
MMr
4MMML .
MMMMM. xf
. "M6MMM .MM-
Mh.. +MM5MMM .MMMM
.MMM. .MMMMML. MMMMMh
)MMMh. MM5MMM MMMMMMM
3MMMMx. 'MMM3MMf xnMMMMMM"

কোথা যাই, কেনই বা যাই?

কোথা যাই, কেনই বা যাই?
ধুর ছাই, মন বসে না শিল্পকলায়
ভোগ-রোগ, হা হা বেশ জমেছে ...
অন্যজনে বিলাই আলো, আমার ঘরেই শিখা নাই
সুখী সেজে ধোকা পাকাই
নিজেই নিজের কানটা মলে
ছি ছি আর যাবো না ঢলের জলে
তো করছিটা কি? লম্ফ-ঝম্প! গোপনে আছে হৃদকম্প
করবি কি আর সেইটা গেলে?
তবু ভেসেই আছি বানের জলে ...
বেশতো ভালো ঘুমিয়ে থাকা, গায়ে ঘামের গন্ধ মাখা
ভাবি আমার বুদ্ধি পাকা
হি, হি, বুঝ~ এমন হদ্দ আর কোথাও নাই

নুরুলদ্দি - এক জটিল শিল্পীর কাব্য

তবু নুরুলদ্দি মিয়া মালপাড়ার ক্ষুদ্র কৃষক
নিজের সন্তানকে বিক্রি করেন দু-চার টাকায়।
নুরুলদ্দি একজন স্রষ্টা, নুরুলদ্দি একই সাথে সৃষ্টি করে শষ্য ও সন্তান
নুরুলদ্দি একজন যোদ্ধা,
নুরুলদ্দি একই সাথে যুদ্ধ করে অন্ধকার ও অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে।
নুরুলদ্দি একজন শিল্পী,
নুরুলদ্দি একজন মহৎ, উদার এবং জটিল শিল্পী
তবু নুরুলদ্দি,
নিজের সন্তানকে বিক্রি করেন দু-চার টাকায়।
নুরুলদ্দির ক্ষেত ভরা সবুজ শিল্প, নুরুলদ্দি শ্রম এবং ঘাম
প্রতিজ্ঞা ও সৃষ্টিময়তা
মেধা ও সংকল্প দিয়ে তিলে তিলে
সৃষ্টি করেন সেই শিল্প।
নুরুলদ্দি একজন মহৎ, উদার ও জটিল শিল্পী।
তবু নুরুলদ্দি,
নিজের সন্তানকে বিক্রি করেন দু-চার টাকায়।
যদি সূর্যটা অকালে গেয়ে উঠতোনা শত্রু সঙ্গীত
যদি ঝড়টা লম্পট মাতালের মতো ছুটে আসতোনা এইদিকে
যদি নোংরা ঐ কীটগুলো অনর্থক কাটতোনা তৃপ্তির জাবর
তাহলে হয়তো যোদ্ধা নুরুলদ্দি

আরো বড়, আরো ব্যাপক কিছু

এবং....সামনে স্বপ্নীল জীবন্ত পথ, ওপরে দূরবর্তী
ভাস্কর্যের মতো ঝুঁকে আছে প্রবীণ আকাশ, পঞ্জরসার রোদের দিগন্তপ্লাবী বন্যায় উন্নাসিক জ্যোছনার মতো ফুটে আছে ছায়া ছায়া ফুল...
নচিকেতার সামনে হয়তো জীবন, হয়তো মৃত্যু।
সামনে ঐন্দ্রজালিক তাপতরঙ্গ।
ইন্দ্রনীল পর্বতের কোল ঘেষে দাঁড়ানো পনডারেসা, পাইন-
য়্যুক্যালিপটাস আর অলৌকিক মহাভারত নারী...
নচিকেতা বিমুঢ়...শতধাবিভক্ত...
এটাই জীবন!
’’না, তমসা ঘাড় নেড়ে বলে, এটা নয়-আরো বড়...আরো ব্যাপক কিছু!’’
পেছনে প্রাচীন পুরুষ...সামনে সাগর, প্রচন্ড চাবুক হাতে মাতাল বাতাস, অতি দ্বিধান্বিত, অতি অলৌকিক, অতি আটপৌরে।
আকাশের ইন্দ্রনীল ঠোঁটে ঘনিষ্ঠ ঈগল পারদর্শী পাখা মেলছে-
তার প্রলম্বিত মেধাবী প্রচ্ছায়া গাঢ় স্বপ্নের মতো জেঁকে আছে স্বপ্ননিষ্ঠ সফেন ঢেউ এর মাথায়
এটাই জীবন!
’’না, তমসা ঘাড় নেড়ে বলে, এটা নয়-আরো বড়...আরো ব্যাপক কিছু!’’

অধরের স্বাদ ভুলে গেছি

অধরের স্বাদ ভুলে গেছি,
জেলখানার কয়েদি জানালার ফাঁকে দেখে
একফালি খোলা আকাশ
তোমার ছবি দু'চোখের আয়না থেকে বুকে নামে যেই
কি যে ভয়ংকর গুরু গুরু প্রকাশ!
এই বুঝি মেঘ নামলো -
এটা মুছি, সেটা গুঁজি
তারপর বুঝে যাই
অধরের স্বাদ ভুলে গেছি।
টুনটুনির চঞ্চলতায় ধরেছিলাম তোমার আঙ্গুল,
সে হাতেই খুঁজে এনেছো তুমি
স্থিরতার আশ্চর্য পরিবেশ অনুকূল;
এখনো স্মৃতির কাছে যতবার যাই
আমার কপালে তোমার শেষ চুম্বন
কি করে এই মুখে করি গুঞ্জন
তোমার স্বাদ ভুলে গেছি, ছাই!

গোলাপবালা....


জানো তো, ভালোবাসা কেমন?
আমার হাতের এই গোলাপবালাটার মতোন
চিরযৌবনা, যুগে যুগে বারে বারে ফিরে আসে
সেই একই রূপ নিয়ে, একই আবেদন নিয়ে...
চিরসুন্দরী...
মা'র যুগেও যা, মেয়ের যুগেও তা....
রঙীন... জ্বলজ্বলে...দগদগে...
গোলাপবালা'র সৌন্দর্য্য পুরনো হয়না....
ভালোবাসারও...... ।।
মাঝে মাঝে শুধু সাদা-কালোয় হারিয়ে যায়
রক্ত লাল ভালোবাসা....
--
শিরোনামহীন/ পুত্তলিকা/ পুতুল

মুক্তগদ্যঃ- বৃষ্টি ও চিঠি বিষয়ক

*
আমি এখন আর কারো কাছে থেকে চিঠি পাই না। সেই অর্থে কারো চিঠির জন্য যে উদগ্র প্রতীক্ষা, সেরকম কেউ আসলে কোনদিনই ছিলোনা। পাতাবাহারের সবুজে ছড়ানো ছিটোনো বিবিধ রঙের মত আনন্দ নিয়ে আসা বর্নিল চিঠি বন্ধ হ'য়ে গিয়েছে এক যুগ আগেই। তবু, বৃষ্টি যখনই নামে; হোক সে মাঝ দুপুরে, হোক ভোর সকালে কিংবা নিওন সন্ধ্যায় নাহয় নিশুতি রাতে। আমার খালি মনে হয় একজন পোস্টম্যান, তার বুড়োটে সাইকেলে চেপে ভিজতে ভিজতে আমার জন্য একটা চিঠি বয়ে আনছে। সারাটা বৃষ্টিক্ষণ আমি অপেক্ষায় থাকি কলবেল বেজে ওঠার...
**
রোদ ঝলমল দুপুরের একটা উদাসী মাদকতা আছে। তার সাথে যদি যোগ দেয় মফস্বলের একাকী রাস্তা আর রাস্তায় এলোমেলো ছড়ানো ছায়ারা... সেই দুপুরের উদাসী মাদকতায় আমি মরতে পারি।
এমনই এক দুপুরে, সাইকেলে টুনটুন ঘণ্টি বাজিয়ে খাকি জামার পোস্টম্যান একটা চিঠি এনেছিলো আমার জন্য।
***

বিস্মৃতি

আমি জানি ভুলতে চেয়েও তুমি কিছুতেই ভুলতে পারবেনা আমাকে।
কেবলই এক মানুষই তো তুমি-কেবলই এক পুরুষইতো! ভুলতে চেয়েও কিছুতেই ভুলতে পারবেনা আমায়। যদি কিশোরবেলার থেকে তোমার বিস্মৃতিচর্চার হিমেল আঙ্গুল এই ম্লান সূর্যাস্তকাল ছুঁয়ে দিতে পারতো, তবে হয়তো আমাকে ভুলতে পারতে তুমি। এখন আর পারবেনা।
আমি জানি, ভুলতে চেয়েও তুমি কিছুতেই ভুলতে পারবেনা আমাকে। যতক্ষণ আমি অর্পন করি আমার অচেনা পরিচয় তোমার চেনা গন্ডির সীমানায় ততক্ষণ বীপ্সার হলুদ হাঙ্গর তোমার ভেতরটাকে ঠুকরে ঠুকরে খাবে - আমাকে ভুলতেই পারবেনা তুমি।

এপিটাপ আমার জন্যে তোমার আঙ্গুল

মামারা চাঁদ নামালো জলে;
আমরাও শরীর ডুবালাম কিছুটা।
চতুর্ভুজ কলার মধ্যে রজনী
উপরে ছোকলা আছে, পিছলে যাবে!
সাবধানি সাধু ধুপ কাঠি জ্বালে
কলমের আগায় নাচে চিত্ত চারবাক।
অঙ্গ যায় ভাসিতে গঙ্গার নাম জপে
জীবের সাথে বোনের বাসায় নিদ্রাকাল!
নারায়ন তকদিরে হয় তেপান্তর
বাসনা সাঙ্গ হলে আর আসব না!
কলিতে ফুটুক যতো বেজন্মা ঘাস
ঘুমুতে যাবার ফলে ফলেছে মাস।
ফড়িং - এ হাওয়া বাজায় নিখুঁত সুরে
দেখে হাত বদল করি গাছের ওজন।
স্বজনের বিয়োগ ব্যাথায় কাঁথা খুঁজি
এপিটাপ আমার জন্যে তোমার আঙ্গুল।
বরাবর পাল্টে গেলো বিষন্ন ভুল, ভীষন ব্যাকুল।

ভিন্নধর্মী লাইভ প্রোগ্রামে স্বাগতম

অনেক পরিশ্রম করে একটা লাইভ প্রোগামের সেট তৈরী করেছি।
বিশ বাই বিশের একটা ঘর, মৃদু নীলচে আলোয় আলোকিত
ধবধবে সাদা একটা বিছানা ছাড়া আর কোনো আসবাব নেই
বিছানার উপর, পাখির পালক ভরা নরোম দু'টো বালিশ
মেঝেতে তিন গ্লাস বরফ শীতল পানি, দু'টো সিগারেট আর একটা লাইটার
ঘরের এক কোনে থাকা স্পিকার থেকে মোলায়েম ভেসে আসছে চৌরাসিয়ার বাঁশির সুর।
"ঘুম"
ভিন্নধর্মী কিন্তু সর্বাধিক সম্প্রচারিত লাইভ প্রোগ্রামে আপনাদের স্বাগতম।

কবিতা: প্রার্থনা তোমার হারিয়ে যায় অন্ধকারে

সে যাই হোক, এখনকার সিচুয়েশন ডিমান্ড করতেসে, ঘাসফুলটার ভেতর থেকে একটা ভয়াল অজগর সাপ বেরিয়ে আসুক। ওটার চাপায় গেঁথে থাকা ধারালো দাঁত দু'টোও বের হয়ে আসুক। এসে গ্রাস করে নিক তার নিজের লেজটাকেই। কিন্তু তেমনটি ঘটছে না। এই না ঘটাটা শুভলক্ষণ নয়।
রঞ্জন সেদিন সন্ধ্যায় গার্মেন্টসের ভেতরেই আল্পনাকে জাপটে ধরেছিলো। তাদের দু'জনের শরীরে বা মনে কোথাও মাধুর্য নেই। ওদের জাপটা-জাপটিতেও ছিলো না। দেহভরা কাম হঠাৎ কুল-কিনারা ভাসিয়ে বইতে শুরু করেছিলো। কেউ দেখে নি।
হরতালে প্রথম নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটলো তিন বছরের মাথায়। উত্তালতাও ইদানীং নতুন মাত্রা পেয়েছে। একদল লোক হিংস্র পশুর মতো রামদা' আর লাঠি হাতে রাস্তায় নামে লুটপাট করতে। কুপিয়ে মানুষ মারতে। আরেকদল নামে বন্দুক হাতে। তাদের পরনে থাকে উর্দি। কিন্তু মননে থাকে জিঘাংসা। কোনো পিকেটিং হয় না। তবু পুলিশের গুলিতে সেই পশুদের একজন মারা যায়। মরেই শহীদ বনে যায়।

মুগ্ধ হাতপাখা

-আবু মকসুদ
গেরুয়া শহরের জমকালো রাত্রিগুলো
ঘোড়ার খুরের আওয়াজে
বিছানায় এলিয়ে পড়ে জীবনের অপূর্ণ ভাণ্ডার
সমুদ্র স্নানে গিয়ে বালির জানুতে
লুকিয়ে ছিলাম মাটির প্রদীপ,
হাত পা গুটানো সময়ে ফের ফিরে এসেছিল চুম্বন স্মৃতি
বিচ্ছিন্ন সম্পর্ক আগুনের হল্কা ছুটায়
যৌথ বাগানের ফুলে ওড়ে কীট, আর
স্মৃতির প্রতিমা হয়ে কাঁদে একদার মুগ্ধ হাতপাখা।
ধুসর বৈধব্য সাজ, বিপরীত মুখী
হাওয়ায় নিভে যায় শেষ মোমবাতি
নদীর ওপাড়ে পোড়ে এক জীবনের দুটি চিতা।

তাস অথবা বাতাস

তাস অথবা বাতাস-
এর মধ্যে হাওয়া এসে উল্টিয়ে দিলো
হুলের মতো স্থুলো সহবাস।
প্রতিবেশি মন শান্ত হলে উচ্চতা বেড়ে
ওঠে ঢেউ;মাছের পোনা না কি ফনা এসে চুমু খেয়ে গেল,
এরই নাম বুঝি বেজন্মা সুনামি!
হার্বার বারবার জল এসে
তুলে ধরে সাঁকোর প্রয়োজন;
তবু তুমি কাছে এসো সই,ধ্বংসাবস্থার আয়োজন।
যদি এসে দেখ খাল বিল বাউলের ঝোলায় ভর্তি তামাক বৃক্ষের বীজ
জগতের সকল শঙ্কার জন্ম হয়ে গেছে তখন;
ভেঙ্গে যাওয়া খোলের হাহাকার;
তুলে নেবে বিধবা বিশ্বের শেষ প্রণয় অধিকার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন